বিয়ের আগে ৬ বিষয় নিশ্চিত হওয়া জরুরি

বিয়ের আগে ৬ বিষয় নিশ্চিত হওয়া জরুরি

মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে বিয়ে অন্যতম। বিয়ে পুরো জীবনের একটি বন্ধন। তাই খুবই সাবধানে এই ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজে। কারণ সম্বন্ধ করে বিয়েতে নেওয়া হয়ে থাকে প্রচুর মিথ্যার আশ্রয়। ঘটক তার ফায়দার জন্য মিথ্যা বলতে পারে, এমনকি কোনো একপক্ষও নিজেদের সুবিধার জন্য মিথ্যা বলতে পারে। তাই বিয়ের আগে ৬ বিষয় নিশ্চিত হওয়া জরুরি।

ডাক্তারি পরীক্ষা: যদিও আমাদের সমাজে এর তেমন প্রচলন নেই, তবুও ডাক্তারি পরীক্ষা করা খুব জরুরি একটা ব্যাপার। ছেলে বা মেয়ের এইডস, হেপাটাইটিস বা যৌন কোনো রোগ আছে কিনা যা তার সঙ্গীকেও আক্রান্ত করতে পারে, তা জানা খুবই দরকার। কারণ এটা পুরো জীবনকে বরবাদ করে দিতে পারে। আমাদের সমাজে অনেক ছেলেই বিয়ের আগে যৌন কর্মীদের কাছে যাতায়াত করে থাকে। মেয়েরা যৌন কর্মীদের কাছে যাওয়ার সুযোগ না থাকলেও ড্রাগের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে ছেলেদের মতই, কিংবা অসুস্থ পুরুষ সঙ্গীর সংস্পর্শেও এসে থাকতে পারে। ফলে রক্ত বাহিত নানান রকমের রোগ সংক্রমণের আশংকা থেকেই যায়। তাই বিয়ের আগে অবশ্যই ডাক্তারি পরীক্ষা করান।

পারিবারিক প্রেক্ষাপট: বিয়ে দুটি মানুষের সাথে সাথে দুটি পরিবারের মাঝেও হয়। দুটি পরিবারের মাঝে বন্ধনের সৃষ্টি হয় দুটি মানুষের বিয়ের মাধ্যমে। তাই কনে বা পাত্রের পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে খোঁজখবর করা জরুরি। যেমন বাবা-মা কেমন, ভাইবোন কী করে, আত্মীয়স্বজন কেমন ইত্যাদি। বিশেষ করে যৌথ পরিবারে বিয়ে করলে এসব অবশ্যই জানতে হবে। কারণ এই পরিবারের সাথেই আপনাকে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে সারাজীবন। তাই পারিবারিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জেনে তবেই বিয়ের দিকে এগোন।

পারিবারিক মেডিকেল হিস্ট্রি: পারিবারিক প্রেক্ষাপটের মতো পারিবারিক মেডিকেল হিস্ট্রি জানাটাও খুবই জরুরি। কারণ বিশেষ কিছু রোগ বংশগতির মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মে বিস্তার করে।
যেমন অটিজম, মস্তিষ্ক বিকৃতি, হাঁপানির মতো রোগ। তাই পরিবারে কেউ উন্মাদ ছিল কিনা বা এমন কোনো ব্যাপার ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করুন। কারণ এসব ব্যাপার আপনার জীবনেও প্রভাব ফেলবে। তাই খোঁজখবর করে পারিবারের মেডিকেল হিস্ট্রি সম্পর্কে নিশ্চিত হোন।
আরও পড়ুন
বিদেশ ভ্রমণে ভিসা পেতে ব্যাংক ব্যালেন্স কত টাকা থাকতে হবে? জেনে নিন জনপ্রিয় দেশের আর্থিক শর্ত
বিদেশ ভ্রমণে ভিসা পেতে ব্যাংক ব্যালেন্স কত টাকা থাকতে হবে? জেনে নিন জনপ্রিয় দেশের আর্থিক শর্ত
টাকা কোথায় রাখলে সবচেয়ে বেশি লাভ? এফডিআর, সোনা না শেয়ারবাজার?
টাকা কোথায় রাখলে সবচেয়ে বেশি লাভ? এফডিআর, সোনা না শেয়ারবাজার?
পাত্র বা পাত্রীর উপার্জন: পাত্র বা পাত্রীর কর্মক্ষেত্রে খোঁজ নিন, তার উপার্জনের উত্‍স সম্পর্কে নিশ্চিত হোন। তিনি কোনো অবৈধ কাজের সাথে জড়িত আছেন কিনা বা তার আয়ের উত্‍স যথাযথ কিনা সে ব্যাপারে খোঁজখবর করুন। অনেক সময় ছেলে কম বেতন পেলে তা বাড়িয়ে বলা হয়, আবার কর্মক্ষেত্রে পদমর্যাদা ছোট হলে তাও গোপন করা হয় বা বাড়িয়ে বলা হয়। একই ব্যাপার ঘটতে পারে মেয়ের ক্ষেত্রেও। তাই এসব ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিয়ে তবেই বিয়ের কথা আগে বাড়ান।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: কনেপক্ষে মেয়ের এবং পাত্রপক্ষ ছেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়েছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন। কারণ এমন ঘটনা হরহামেশাই দেখা যায় যে, শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যাপারে তথ্য গোপন করে যায় অনেকে। এইচএসসি পাশ ছেলে বা মেয়েকে চালানো হয় অনার্স পাশ হিসেবে। তাই এ ব্যাপারেও খোঁজখবর করুন।

বিয়ের পরে ভবিষ্যত্‍ পরিকল্পনা : যার সাথে আপনার বিয়ে হবে তার সাথে নিজের ভবিষ্যত্‍ পরিকল্পনা সম্পর্কে খোলাখুলি আলোচনা করুন। তার ভবিষ্যত্‍ পরিকল্পনা কী সেটাও জানুন। এতে বিয়ের পরে সংসার, ক্যারিয়ার, পরস্পরের প্রতি সমঝোতা ইত্যাদি বিষয়ে সমস্যা কম হবে। এমনকি বাচ্চা কবে নিতে চান এ ব্যাপারেও কথা বলুন। নয়তো পরে দেখা যাবে আপনি ক্যারিয়ার গড়তে চান আর আপনার সঙ্গী বাচ্চা নিতে চায় যা হয়তো সেসময় আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়াও আপনারা বিয়ের পর যৌথ পরিবারে থাকবেন নাকি আলাদা থাকবেন, তাও বিয়ের আগে আলোচনা করে নিশ্চিত হয়ে নিন।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *